৩ ঘণ্টার মাথায় পাল্টি দিলেন এরশাদ

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৩ ঘণ্টার মাথায় সিদ্ধান্ত পাল্টালেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে মহাজোটের প্রার্থীকে সমর্থন দিবেন এবং তার পক্ষে কাজ করবেন। তবে ৩ ঘন্টা পর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে না।

বারিধারায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে মহাজোটের বাইরে আলাদা প্রার্থীদের বিষয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছিলেন, ‘মহাজোট মনোনীত যেসব প্রার্থী আছে, তারা ছাড়া অন্যদের সরে যেতে হবে। মহাজোটকে বিজয়ী করার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। মহাজোট সরকার উন্নয়নের রোল মডেল। এবারের নির্বাচনে মহাজোটই জিতবে। কারণ, বিএনপির অতীত ইতিহাস ভালো না। নৌকা নয়, ধানের শীষ ঠেকাতে জাপার আলাদা প্রার্থী।’

বৃহস্পতিবার রাত আটটায় জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি দেলোয়ার জালালীর পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এরশাদ এরশাদ জানান, মহাজোট ব্যতীত জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মুক্তভাবে নিজ নিজ আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যে সবাইকে নির্বাচনের মাঠে থাকার নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার বক্তব্য ভুলভাবে প্রচারিত হচ্ছে। তাই সব প্রচারিত/প্রকাশিত এবং সম্প্রচারিত সংবাদ সংশোধন করার অনুরোধ করছি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের যেসব স্থানে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীরা উম্মুক্ত ভাবে নৌকা ও ধানের শীষের সঙ্গে সমান লড়াইয়ে অবতীর্ণ সেসব স্থানে আসনগুলোতে শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে জাতীয় পার্টি।

জানা গেছে, সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরার পর পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ এসব আসনে মহাজোটের সমর্থনে লাঙলের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিতে পারে বলে গুঞ্জন উঠে। মহাজোট থেকেও আসনগুলো প্রত্যাহারে অনুরোধ রয়েছে। কিন্তু এসব আসন প্রত্যাহার না করতে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। বুধবার সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরার পর নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এরশাদ। সারাদেশের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কথা চিন্তা করে উম্মুক্ত আসনগুলোতে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন বলে দলটির নীতি নির্ধারণী সূত্র জানিয়েছেন।

খবর নিয়ে জানা গেছে, মহাজোটের বাইরে বিভিন্ন আসনে লাঙলের অনেক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে অনেক প্রার্থীর অবস্থান ভালো। তাছাড়া নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এসব আসন থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হলে দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ এমনকি দলের বড় ধরণের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। সব কিছু বিবেচনা করে অসুস্থ এরশাদ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব উম্মুক্ত আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচনী মাঠে থাকার নির্দেশনা দেবেন বলে দলটির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে।

এবারের নির্বাচনে মহাজোট থেকে ২৯টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। এর বাইরে আলাদাভাবে আরও ১৪০টি আসনে উন্মুক্ত প্রার্থী রাখার কথা জানায় জাতীয় পার্টি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নৌকা নয়, ধানের শীষ ঠেকাতেই এই প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।